কীভাবে Linkedin এর মাধ্যমে নিজেকে ব্র্যান্ডিং করবেন | How to brand yourself through Linkedin

Linkedin-কে অনেকে বলেন,পেশাজীবীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। নেটওয়ার্কিং বা যোগাযোগ গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও এটি বেশ কার্যকর। এখনকার সময়ে পেশাজীবনের জন্য পারসোনাল ব্র্যান্ডিং বা একটা ব্যক্তিগত পরিচয় গড়ে তোলা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সে ক্ষেত্রেও কাজে আসে Linkedin। এই ওয়েবসাইটে আপনি এমন সব মানুষের সঙ্গে যুক্ত থাকবেন, যারা আপনার বর্তমান বা সম্ভাব্য সহকর্মী, আপনার পছন্দের বা স্বপ্নের কর্মক্ষেত্র হয়তো তারা কাজ করেন, এমনকি তাদের মধ্যে অনেক নিয়োগদাতাও আছেন। Linkedin এ পারসোনাল ব্র্যান্ডিং করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখা উচিত। কেননা এখানে আপনি যা-ই করবেন, তাতে পেশাদারত্ব ও দক্ষতার ছাপ থাকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কীভাবে একটি কার্যকর ও আকর্ষণীয় Linkedin প্রোফাইল তৈরি করা যায়, সে সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছেন খোদ Linkedin এরই ডিজিটাল বিপণন ও যোগযোগ ব্যবস্থাপক জেন ফ্লেমিং। তার লেখাটি প্রকাশিত হয়েছে Linkedin ব্লগে। জেনের দেওয়া কয়েকটি পরামর্শ জেনে নেওয়া যাক।


১। প্রোফাইল পিকচারঃ যে প্রথম ভাবমূর্তি সৃষ্টি করে, অর্থাৎ "ফার্স্ট ইমপ্রেশন" তৈরিতে যে এর গুরুত্ব অনেক, যে তো আমার সবাই জানি। আর Linkedin এই প্রোফাইল পিকচার হতে হবে ফরমাল, যা আপনার পেশাদারত্বের প্রমাণ দেবে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক ছবি দিতেও ভুলবেন না। ব্যাকগ্রাউন্ড ফটো সৃষ্টিশীল হলে তা আপনার লিংকডইন প্রোফাইলকে আরও দৃষ্টিনন্দন করবে। আপনার আগ্রহের বিষয়,চিন্তাধারা, সংবেদনশীলতা প্রকাশ করে, এমন ছবিই এ ক্ষেত্রে বেছে নেওয়া উচিত।

২। Linkedin প্রোফাইলের শিরোনামে অনেকে শুধু জব টাইটেল বা পদ লিখে রাখেন। এ ক্ষেত্রে আপনার কাজের বিস্তারিত, নিজের কাজ সম্পর্কে আপনার মতামতও যদি লেখা থাকে, তবে অন্যদের জন্য আপনার কর্মদক্ষতা সম্পর্কে বুঝতে পারা সহজ হয়।

৩। সামারি অংশটি গল্পের মতো করে লিখতে পারেন। পারসোনাল ব্র্যান্ডিংয়ে এটি রীতিমতো কনটেন্ট মার্কেটিং এর মতো কাজ করে। তাই সময় নিয়ে, যত্ন করে এখানে বলুন আপনার গল্প। অল্প কথায় নিজেকে আপনি কতটুকু প্রকাশ করতে পারলেন, তারও প্রামণ কিন্ত প্রোফাইলের এই অংশ।

৪। ইদানীং বেশিরভাগ Linkedin প্রোফাইলেও স্পেশালাইজড, লিডারশীপ, এক্সপেরিয়েন্সড-এর মতো বহুল ব্যবহৃত শব্দ ঘুরে ফিরে আসে। বলছি না যে এই শব্দগুলো একবারে এড়িয়ে চলুন। তবে নিজের দক্ষতার কথা বলতে বেছে নিন ভিন্নধর্মী কিছু শব্দ, অন্য রকম ধারা,যা আপনার সম্ভাব্য নিয়োগকর্তাকে জানাবে আপনি অন্যদের চেয়ে আলাদা।


৫। নেটওয়ার্ক বাড়ানোর ক্ষেত্রে অবশ্যই মনোযোগী হবেন। বিশেষত নিজের কাজ সংক্রান্ত খাতা বা ইন্ডাস্ট্রির মানুষের সঙ্গে যুক্ত থাকার চেস্টা করুন। তাতে ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে সাম্প্রতিক খবরাখবর জানতে পারবেন সহজে। সেই সঙ্গে আপনার কর্মদক্ষতার ব্যাপারটিও সংশ্লিষ্টদের কাছে পৌছে যাবে।

৬। নিজের দক্ষতা প্রোফাইলে যাথার্থভাবে তুলে ধরার জন্য "এনডোর্সমেন্ট" অপশন ব্যবহার করুন। যেমন, আপনি যদি একজন ডিজিটাল মার্কেটিয়ার হয়ে থাকেন, তবে আপনি যে প্রকল্প বা পণ্যের জন্য কাজ করেছেন, সেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং দক্ষতার এনডোর্সমেন্ট যোগ করুন। এতে আপনার প্রোফাইলের ও দক্ষতার বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়বে।

৭। দক্ষতা যাচাই বা স্কিল অ্যাসেসমেন্টের অপশনটিও অবসরে কাজে লাগাতে পারেন। এর মাধ্যমে প্রোফাইলে যোগ হবে আপনার দক্ষতার স্তর ঠিক কোনটি। Linkedin এর তথ্যমতে, ভেরিফায়েড স্কিল, অর্থাৎ দক্ষতার পরীক্ষিত প্রমাণপত্র থাকলে নিয়োগের সম্ভাবনা অন্তত ৩০ শতাংশ বেড়ে যায়।

৮। এনডোর্সমেন্টের পাশাপাশি সাবেক নিয়োগদাতা,বর্তমান নিয়োগদাতার দেওয়া রিকমেন্ডেশন ও প্রোফাইলে যোগ করুন এর গুরুত্ব আরও বেশি। কেননা, এটি পারসোনাল টেস্টিমোনিয়াল বা দক্ষতার প্রমাণ হিসেবে কাজ করে।

৯। নিজের বিভিন্ন অর্জন, বিশেষত গবেষণাপত্র,সেমিনার সংশ্লিষ্টতা- এসব প্রোফাইলে যোগ করতে ভুলবেন না। নিজ পেশায় আপনার দক্ষতা ছাড়াও আন্তরিক আগ্রহ প্রকাশ পাবে এর মাধ্যমে।

১০। Linkedin এ মেসেজ বা কমেন্ট করার ক্ষেত্রে পেশাদারত্ব বজায় রাখুন। মনে রাখবেন, এই যোগাযোগমাধ্যম আপনার কর্মদক্ষতার পরিচায়ক।
বর্তমান সময়ে সিভির আগে Linkedin প্রোফাইল বলবেন আপনার দক্ষতা ও পেশাদারত্বের কথা। তাই এই ধাপগুলো মেনে Linkedin এ নিজেকে প্রকাশ করুন একজন সচেতন পেশাজীবী হিসাবে।

কার্টেসিঃ তাবাসসুম ইসলাম